ইসরাইলি হামলায় ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দরে হতাহতের ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
- By Jamini Roy --
- 27 December, 2024
ইয়েমেনের রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় তিনজন নিহত এবং অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন জাতিসংঘের উড়োজাহাজের ক্রু সদস্য। বিমান হামলার সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরস আধানম গেব্রেয়াসুস। অল্পের জন্য তিনি রক্ষা পেলেও এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে ইসরায়েলি বাহিনী সানা বিমানবন্দরসহ এর গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বিমান হামলা চালায়। এতে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার, রানওয়ে এবং অন্যান্য অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলাকে হুতি বিদ্রোহীদের পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ডব্লিউএইচও প্রধান তেদরস গেব্রেয়াসুস এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্টে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “ইসরায়েলি হামলায় আমাদের উড়োজাহাজের একজন ক্রু সদস্য আহত হয়েছেন এবং বিমানবন্দরে দুইজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। জাতিসংঘের অন্যান্য কর্মীরা নিরাপদে আছেন, তবে তাদের যাত্রায় বিলম্ব ঘটেছে।”
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইরানের মিত্র গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করছে। তাদের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। এরই জবাবে বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সানা বিমানবন্দর, আল-দাইলামি সামরিক ঘাঁটি এবং হোদেইদাহ শহরের বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রেড সি বন্দরে বিমান হামলা চালায়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ হামলার পর কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমরা হুতি বিদ্রোহীদের সমস্ত সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর। যারা আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে আক্রমণ করব।”
ডব্লিউএইচও প্রধানের সফরের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের স্বাস্থ্যখাত ও মানবিক সংকট মূল্যায়ন করা। ইয়েমেন দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত ও মানবিক বিপর্যয়ে ভুগছে। দেশটিতে অবকাঠামোগত ক্ষতি এবং খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতিতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এই হামলা ইয়েমেনের সংকট আরও ঘনীভূত করেছে। স্থানীয় সাংবাদিক হুসেইন আল-বুখাইতি জানান, “বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য ছিল, যা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।”
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো ইসরায়েলের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।